আমি সেই মানুষ, বিষাদ যার বন্ধু। আমিই সেই মানুষ যার আত্মা বেদনায় পরিপূর্ণ……প্রাচীন এক কিতাব হতে আবৃত্ত হচ্ছে এমন স্তব। সাদা মখমল ভিজে উঠছে বেদানার ক্রিমসনরঙা রসে। টেবিলে রাখা একটা ছুরি। দ্রাক্ষার থোকা পদদলিত করে যাচ্ছে ফর্সা পা। মৃত্যুপূর্ববর্তী নৃত্যে ব্যস্ত তিনটি মাছ। প্রার্থনালয়ের দেয়ালে চারটি মোমবাতির নিভে গেছে দুটো। ঝোড়ো বাতাস। জলের শব্দ। পিঠ ভাঁজ করে উবু হয়ে তাকিয়ে আছে বালক কবি সায়াত-নোভা। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। আলো-আঁধারিতে বিড়াল দেবতার পাথুরে মুখ।
সের্গেই পারাজানোভ এর দ্য কালার অব পমেগ্রেনেটস (১৯৬৯)-কে অষ্টাদশ শতকের আর্মেনিয় কবি সায়াত-নোভাকে নিয়ে নির্মিত সিনেমা বলা গেলেও এই সিনেমা কোনোভাবেই কবির জীবনকে চিত্রিত করেনা বরং নোভার মনের ভেতরকার জগৎ আর পারাজানোভের অদ্ভুত সুন্দর সিম্বোলিক কল্পনাশক্তির মিশ্রণকে চিত্রিত করে। নির্মাতা সের্গেই পারাজানোভ নিজস্ব কল্পনার সাথে মধ্যযুগীয় আর্মেনিয় এবং খ্রিস্টিয় বিভিন্ন প্রতীকের মিশেলে এই জগতকে চিত্রায়িত করেছেন যা আসলে প্রেম, মৃত্যু, বিশ্বাস, ত্যাগের কবিতা। সত্যি কথা হলো তৎকালীন আর্মেনিয় সমাজ কিংবা সায়াত-নোভাকে না জেনে এই সিনেমা বোঝা কষ্টকর। সিনেমায় আর্মেনিয় কৃষ্টি, পোশাক-আশাক, সঙ্গীতের নান্দনিক উপস্থাপন দেখা যায়। আর্মেনিয় এপোস্টলিক চার্চের যাজক ছিলেন নোভা। কাজার সম্রোজ্যের প্রতিষ্ঠাতা শাহেনশাহ আগা মুহম্মদ খান কাজারের আর্মেনিয়া আক্রমণের মধ্য দিয়ে মৃত্যু হয় নোভার। ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে তার শিরশ্ছেদ করা হয়। দ্য কালার অব পমেগ্রেনেটস সিনেমায় কবির মৃত্যুর কাব্যিক দৃশ্যায়ন থাকলেও কীভাবে এই মৃত্যু ঘটে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয় না।
সিনেমার প্রথম অংশেই আমরা তরুণ কবিকে দেখতে পাই অনুভূতিপ্রবণ আর পরাবাস্তব দৃশ্যে। পুস্তকরাজি পিষ্ট হতে থাকে ততক্ষণ, যতক্ষণ না তাদের ভেতর থেকে প্রবাহিত হয় জল, চার্চের সামনে তৈরি হয় তাদের এলোমেলো স্তুপ এবং অবশেষে টালিছাদে ছড়িয়ে রাখা হয় তাদের আর কবির বালক দেহ শুয়ে যায় সারি সারি বইয়ের মাঝে।
রাস্তায় বেদানার রঙে রাঙানো হচ্ছে সুতা। মন্দিরে রঙিন কাফনে মোড়ানো লাশ। একজন দেবী আর তাঁর বেদনাবিধুর চোখ। ক্ষণেক্ষণে বেজে উঠছে কামান থেকে নির্গত সুরের নহর। চোখবাঁধা এক যুবক আর দুইজন ফেরেশতা, সাদা পোশাকে মোড়ানো প্রিয়তমার লাশ আর কবি। এক পরাবাস্তব অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া। এই অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া হয়তো কবির প্রিয়তমা স্ত্রীর। এসবের সাথে সামঞ্জস্যতায় বাজছিলো কান্নার মতো করুণ সংগীত। চোখবাঁধা যুবকটির কাছ থেকে রুটি কেড়ে নিয়ে সায়াত-নোভার হাতে তুলে দিলো ফেরেশতারা। আর তখনই উপস্থিত যারা ছিল সবাই স্বীকার করে নিলো নোভার কবিতাকে, তাঁর বিষাদগ্রস্ত জীবনকে। সবাই একসাথে বলে উঠলো ‘দুনিয়া একটা জাফরিকাটা জানালা’।
দ্য কালার অব পমেগ্রেনেটস হয়তো সেই সিনেমা, যা আমাদের দেখায় রুটির সাথে পৃথিবীর সম্পর্ক, বেদানার সাথে ছুরির সম্পর্ককে। এই সম্পর্ক খুব জাগতিক সায়াত-নোভার কবিতার মতো, যা কেবল পবিত্রতার কথা বলে, সৌন্দর্যের কথা বলে। আমরা বুঝতে পারি যে, সৌন্দর্য সেই জানালা যার দিকে তাকাতে হলে অতিক্রম করতে হয় দুঃখ।
দর্শক যখন প্রথম সিনেমাটি দেখার সুযোগ পেয়েছিল তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের বাইরে খুব কম মানুষই সায়াত-নোভার কবিতা সম্পর্কে জানত। এসব কবিতা অনূদিত হয়েছে অনেক ভাষায়। ছোরা, সিল্ক ব্রকেড, ছাই, শোক-পোশাকের উৎস এখন আর অজানা নয়। পারাজানোভ কবির জগতটাকে তৈরি করেছেন তাঁর মতন করে, আক্ষরিক অর্থেই দৃশ্যায়ন করেছেন কবির চিত্রকল্পসমূহের।
হোক মৃত্যু বা জাগরণ, হোক বা বিদায়ের অন্তিমক্ষণ; আমার স্তবই প্রাণ জ্বেলে যাবে তোমাদের ঘুমন্ত কোলাহলে—সায়াত-নোভা
রুশ আর আর্মেনিয় সংকলন ব্যবহার করে দ্য কালার অব পমেগ্রেনেটস এর পুনঃসংস্করন করেছে ইতালির ইমাজিন রিট্রোভাটা ল্যাবরেটরি। সৃষ্টি পরবর্তী প্রায় পনেরো বছর পর্যন্ত পমেগ্রেনেটস, এর নির্মাতার মতোই স্নায়ুযুদ্ধের ধুম্রজালে বন্দী ছিল। নিষেধ, কাটাছেঁড়ার পর বুটলেগ সংস্করণটি কোনোরকমে পশ্চিমে পাচার হবার পর সিনেমাটি নিজ অধিকারবলেই নান্দনিকতা আর শিল্পগুণকে ছাপিয়ে আরও ভিন্নতর কোন সৃষ্টিতে পরিণত হয়েছিল। এরপর পারাজানোভকে নানান উদ্ভট অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে লাঞ্ছিত এবং বন্দী করা হয়। আন্তর্জাতিক মহলে এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সিনেমাটি আরো রাজনৈতিক হয়ে উঠল। বিশ্বব্যাপী শিল্পীর স্বাধীনতায় বিশ্বাসীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠলেন।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, পারাজানোভ সোভিয়েত সিনেমায় নির্ঝঞ্ঝাট ক্যারিয়ার ছেড়ে এই ঝামেলার রাস্তায় কেন এগোলেন? জর্জিয়ার ‘বহু-সংস্কৃতি’র রাজধানী তিবিলিসিতে আর্মেনিয় বাবা-মার ঘরে ১৯২৪ সালে তাঁর জন্ম। ১৯৪৫ সালে নামকরা মস্কো ফিল্ম স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। সময়টা সোভিয়েত সিনেমার জন্য খুব একটা সুবিধার ছিল না। স্তালিনের রুদ্ধশ্বাস নিয়ন্ত্রণের ভেতর, সোভিয়েত সিনেমা গুটিকয়েক নিষ্প্রভ প্রযোজনায় গিয়ে ঠেকেছিল। বেশিরভাগই ছিল আবার স্বাদহীন মিউজিক্যাল অথবা হুলুস্থুলু বিজয়োল্লাসের ছবি, যেমন, স্তালিনের চোখের মণি মিখাইল শরেলি পরিচালিত দ্য ফল অব বার্লিন (১৯৫০)। কিন্তু পারাজানোভ যথেষ্ট ভাগ্যবান ছিলেন। দুজন মহান ইউক্রেনিয় পরিচালক আলেকজান্দার দভ্জেঙ্কো আর ইগর সাভ্চেঙ্কো তাঁর গুরু ছিলেন। সাভ্চেঙ্কোর শেষ সিনেমা তারাস শেভ্চেঙ্কো (১৯৫১)-তে অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করেন কিয়েভে গিয়ে। এরপর পারাজানোভ কিয়েভেই থাকলেন কিছুদিন। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বড় বড় ফিল্ম স্টুডিওগুলো কিয়েভেই ছিলো। পারাজানোভ গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলেন, ৪টা ফিচার ফিল্ম তৈরি করলেন। সেগুলো পঞ্চাশ-ষাট দশকের অন্য পাঁচটা সোভিয়েত সিনেমার মতোই ছিল—যৌথ খামারের প্রেক্ষাপটে তৈরি মিউজিক্যাল কমেডি, আরেকটা রোমান্টিক মেলোড্রামা যার নাম ইউক্রেনিয়ান র্যাপসোডি (১৯৬১)। পরবর্তী সময়ে পারাজানোভ তাঁর এসময়ের কাজকে অস্বীকার করেছেন, ফালতু বলেছেন আর দর্শককে সেগুলো দেখতে নিরুৎসাহিত করেছেন। তার প্রথম ‘প্রকৃত’ সিনেমা (পাজারনোভের মতে) শ্যাডোস অব ফরগটেন অ্যান্সেস্টরস (১৯৬৫)।
পারাজানোভকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল কী? সবচেয়ে প্রচলিত গল্পটি হচ্ছে, পারাজানোভ ১৯৬২ সালে তারকোভ্স্কির প্রথম সিনেমাআইভান’স চাইল্ডহুড (১৯৬২) দেখেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল—”অসাধারণ, বিস্ময়কর সুন্দর এক ছবি- আইভান’স চাইল্ডহুড না থাকলে আমি কোনো কিছুই সৃষ্টি করতাম না।”
তারকোভ্স্কি তুলনামূলক সাধারণ এক রুশ যুদ্ধের গল্প বেছে নিয়েছিলেন, এক অসম সাহসী বালক মিলিটারি স্কাউটের গল্প—আর সেই গল্পকে সাজিয়েছিলেন অসাধারণ চিত্রকল্প দিয়ে। বিশেষত স্বপ্নদৃশ্যগুলোয় ইমেজের ব্যবহার বুনুয়েল, ফেলিনি এবং অবশ্যই ফ্রয়েডের কথা স্মরণ করায়। ছায়াবৃত এই সিনেমার জগত ছিলো দুঃস্বপ্নের মতো। এমন কোন সোভিয়েত সিনেমা আগে হয়নি, অন্তত দভ্জেস্কোর আর্সেনাল (১৯২৯) আর আর্থ (১৯৩০) এর পরে তো নয়ই।
পারাজানোভ এর শ্যাডোস অব ফরগটেন অ্যান্সেস্টরস ছবিটির ফলাফলও একইরকম ছিল, যদিও ছোট পরিসরে। সাহিত্যের লোকায়ত উপাদানকে একদম নতুন ভঙ্গিতে ব্যবহার করেছিলেন তিনি, উনিশ শতকের ইউক্রেনের এক গ্রামের রোমিও-জুলিয়েট ঘরানার এক গল্পকে আঁকাবাঁকা ক্যামেরা মুভমেন্ট আর প্রাইমারি কালারের সাহসী ব্যবহারে দেখিয়েছেন, এমনকি সিনেমার একটি দৃশ্যে পুরো পর্দা টকটকে লাল রঙে ভেসে যায়। অবশ্যই কর্তৃপক্ষের সিনেমাটি নিয়ে আপত্তি ছিল। পারাজানোভ গোঁ ধরেছিলেন যে, ছবির শুটিং চলাকালীন খানিকটা ইউক্রেনিয় উপভাষাকে তিনি কিছুতেই রুশ ভাষায় ডাব করবেন না। সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যান্য অঞ্চলে প্রদর্শনের জন্য যা গস্কিনো, তৎকালীন সোভিয়েত সেন্ট্রাল ফিল্ম অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শর্ত ছিলো। শ্যাডোস এর ভাগ্য এই গ্যাঁড়াকলে ঝুলে ছিল, কিন্তু শেষমেশ পারাজানোভই জয়ী হন আর সিনেমাটি মূলভাষাতেই মুক্তি পায়। শ্যাডোস এর এ সাফল্যেই পারাজানোভ আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। কিন্তু তারপরই তিনি নিজেকে আবিষ্কার করলেন সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ আর ইউক্রেনের সাংস্কৃতিক শুদ্ধতাবাদীদের এক ক্রসফায়ারের মধ্যে। ইউক্রেনের লোকগাঁথার অমন ধোঁয়াশাচ্ছন্ন উপস্থাপনে শুদ্ধতাবাদীদের আপত্তি ছিল। পরবর্তী সময়ে পারাজানোভ আর কোন ইউক্রেনিয় চলচ্চিত্রের কাজ নিয়ে স্ক্রিন-টেস্ট এর বেশি এগোতে পারেননি।
দ্য কালার অব পমেগ্রেনেটস প্রধানত আর্মেনিয়া এবং জর্জিয়ায় চিত্রায়ণ করা হয়। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছিল আর্মেনফিল্ম। নিজের আন্তঃককেশিয় শেকড় সন্ধানে পারাজানোভের যাত্রার প্রতিফলন পুরো সিনেমাতে লক্ষ্য করা যায়। যৌবনকালে জর্জিয়ার রাজধানীতে তিনি সঙ্গীত এবং নৃত্যকলা বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর ভবিষ্যত চলচ্চিত্রযাত্রায় সবচেয়ে প্রভাব রেখেছিলো শহরের অ্যান্টিকের মার্কেট আর দোকানগুলো। তাঁর বাবা এই অ্যান্টিক ব্যবসাতেই মূল্যনির্ধারকের কাজ করতেন। ককেশিয় সংস্কৃতির প্রতি মায়ের রুচিবোধও পারাজানোভকে প্রভাবিত করে। তবে, বর্তমান সময়ের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির স্রোতের মাঝে পারাজানোভের জাতিগত পরিচয়ের সুতো ছাড়ানো বড় কঠিন কাজ। পারাজানোভ নিজেও স্বীকার করেছেন- “আমার আত্মজীবনী খুবই বিভ্রান্তিকর”। ‘৮৮ সালে রটারড্যাম ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ঠাট্টা করে বলেছিলেন, যেহেতু তার বন্ধুরাও তার জন্মদিন জানে না, তিনি যখন ইচ্ছে তখন জন্মদিন উদযাপন করতে পারেন। “উৎসবের জন্য জর্জিয়ায় যেকোন অজুহাত চলে।”
আমার আত্মজীবনী খুবই বিভ্রান্তিকর
সোভিয়েত আমলের শেষ দিকে ককেশিয় অঞ্চলে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার চেতনা বিকাশ পাচ্ছিল। পারাজানোভের দ্য কালার অব পমেগ্রেনেটস-কে এই বিকাশের চিহ্ন হিসেবে দেখা যেতে পারে। তাঁর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ফিচার ফিল্ম তৈরির ঠিক আগে পারাজানোভ একটি ছোট ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলেন। উনিশ শতকের জর্জিয়-আর্মেনিয় চিত্রশিল্পী হাকব হভন্যতানয়ান এর ওপরে। ক্যামেরায় ধরেছিলেন শিল্পীর পেইন্টিং এর খুঁটিনাটি। নিজের শৈশবের তিবিলিসিকে সামনে নিয়ে এসেছিলেন। এরপর তিনি বেরিয়ে পড়লেন গোটা আর্মেনিয়াকে ক্যামেরায় ধরতে। সেখানেই সোভিয়েত আমলের শেষদিকে ককেশিয় অঞ্চলে যে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার চেতনা বিকাশ পাচ্ছিল, ছিলো হাঘপাত এর মধ্যযুগীয় মঠ, যা পরবর্তীতে সায়াত- নোভার অনন্যসাধারণ স্থাপত্যের প্রেরণা দিয়েছিল।
কিন্তু সায়াত-নোভার ক্ষেত্রে এমন হয়নি। সের্গেই ইয়ুটকেভিচ এর মতো একজন বর্ষীয়ান আভাঁ-গার্দিস্ট সিনেমাটিকে পুনঃসম্পাদনা করেছিলেন। আশা করেছিলেন, সিনেমাটি আরো ব্যাপকভাবে দেখানোর উপযোগী হবে। দ্য কালার অব পমেগ্রেনেটস-এর মত কাব্যিক নামের পরেও সিনেমাটি দ্রুত কুখ্যাতি লাভ করল। তারকোভ্স্কির আন্দ্রে রুবলেভ (১৯৬৬) এর পরিণতিই যেন অপেক্ষা করছিল এর জন্য। উভয় সিনেমার ক্ষেত্রেই প্রদর্শনী খুবই সীমিত ছিল এবং বিদেশে মুক্তির ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হচ্ছিল। প্রায় সবক্ষেত্রেই আলাদা হওয়ার পরেও দুটি সিনেমা যেন একই অপরাধে অপরাধী ছিল। সেই অপরাধ নিজস্ব এক অনন্যসুন্দর জগত গড়বার, যেখানে কমিউনিস্ট আদর্শের প্রতিফলন ঘটেনি। পারাজানোভের রহস্যময়ী ঢং আর্মেনিয় শুদ্ধতাবাদীদের খেপিয়ে তুলেছিল।
পারাজানোভ জর্জিয় লোকগাঁথার নিজস্ব সংস্করণ তৈরি করেছিলেন, রিপেন্টেন্স এর সরাসরি রাজনৈতিক প্রভাব এতে ছিল না। রিপেন্টেন্স ছিলো স্তালিনের শাসনের এক রূপকধর্মী চিত্রায়ণ। কিন্তু নতুন করে নিজস্ব স্টাইলে কাজ করার যে স্বাধীনতা তিনি ফিরে পেলেন তা ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে রাজনৈতিক কারণে শিল্পীদের উপর কড়াকড়ির দিন শেষ হচ্ছে।
মূল: ইয়ান ক্রিস্টি
ভাষান্তর: শিয়ান শাহরিয়ার আলমগীর
উপরোক্ত প্রবন্ধটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের বার্ষিক প্রকাশনা ‘ফ্ল্যাশব্যাক’ এর ‘পূর্ব ইউরোপীয় চলচ্চিত্র’ সংখ্যা হতে সংকলিত
1 Comment
Devon Conway
Nice writing but what language it is ?